আসুন পরিচিত হই সেরা একটি বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপের সাথে।

আজ আপনাদের মাঝে কোন টিউটোরিয়াল নিয়ে উপস্থিত হয়নি। তবে আশাহত হবার কোন কারণ নেই। খুব শীঘ্রি টিউটোরিয়াল আসছে। আজ আপনাদেরকে একটি ফেসবুক গ্রুপের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো। গ্রুপের নাম বাংলা ইলেকট্রনিক্স। নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এটা একটি ইলেকট্রনিক্স গ্রুপ।

বাংলা ইলেকট্রনিক্স - জয়ের বাংলা ব্লগ
বাংলা ইলেকট্রনিক্স

কিন্তু এর চঞ্চলতা  এবং অসাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য অন্যসব ইলেকট্রনিক্স গ্রুপ থেকে এটাকে সতন্ত্র করেছে। ১৫ হাজারের বেশী মেম্বার সম্মলিত বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপে সারাক্ষণ চলে ইলেকট্রনিক্স আড্ডা। গ্রুপের এডমিন এবং মেম্বারগণ খুবই আন্তরিক। নতুন হবিষ্ট থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ প্রকৌশলী, সবারই আনাগোনা চলে এই গ্রুপে।

বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপের শুরুর দিকের কথাঃ

বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রপের প্রতিষ্ঠাতা শ্রদ্ধেয় জিএম খলিলুর রহমান পেশায় একজন প্রকৌশলী। চাকুরি সুত্রে যশোরের বাসিন্দা। অফিসের কাজের ফাঁকে ফাঁকে ফেসবুকে বিভিন্নভাবে নতুন হবিষ্টদের হেল্প করেন। অসাধারণ আন্তরিকতার এই মানুষটি এক সময় একটি ইলেকট্রনিক্স গ্রুপ খোলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। যার মূল লক্ষ্য হল, মাতৃভাষা বাংলায় ইলেকট্রনিক্সের মত একটি সৃজনশীল নেশাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া, নতুনদের সঠিক দিক-নির্দেশনা দেওয়া এবং নিজের বিভিন্ন আর্কষণীয় প্রজেক্ট সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া।

14914592_1306463829375384_1710137896_n
জিএম খলিলুর রহমান

এরই পরিপেক্ষিতে 15 September 2015 তারিখে বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। দেখতে দেখতে গ্রুপের মেম্বার সংখ্যা হুর হুর করে বাড়তে থাকে। আজ বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপের বয়স ১ বছরের কিছু বেশী, আর মেম্বার সংখ্যা ১৫ হাজার প্লাস। এটা সম্ভব হয়েছে কেবল মাত্র জিএম খলিলুর রহমান ভাই, গ্রুপ এডমিন এবং মেম্বারদের আন্তরিকতার কারণে।

বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপ থেকে কি শিখতে পারবেনঃ

বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপ কেবলমাত্র একটি ফেসবুক গ্রুপ নয়। এটি ইলেকট্রনিক্স শেখার একটি বিদ্যাপীঠ। আপনি যে বয়সের হোন না কেন যদি আপনার ইলেকট্রনিক্সের নেশা থেকে থাকে, যদি শেখার আগ্রহ থাকে। তাহলে বাংলা ইলেকট্রনিক্স আপনার জন্য আর্শীবাদ সরুপ। শুধু যুক্ত হউন, আর শিখতে থাকুন।

ছোট খাট হবি প্রজেক্ট থেকে শুরু করে মাইক্রোকন্টোলার বেজড বড় বড় প্রজেক্ট নিয়ে নিয়মিত আলোচনা চলে বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপে। মেম্বারগণ তাদের নিত্যনতুন প্রজেক্ট পোষ্ট করেন। নতুনদের অভিজ্ঞরা সব ধরণের হেল্প করে থাকেন। এখানে একজন নতুন হবিষ্ট কে ততটায় সম্মান করা হয়, যতটা একজন সিনিয়র মেম্বারকে করা হয়।

আপনি যদি ইলেকট্রনিক্স শিখতে চান। যদি না জেনে থাকেন কিভাবে শুরু করবেন। প্রয়োজনীয় টুটলস কোথায় পাবেন, কেমন দাম নিতে পারে ইত্যাদি হাজার প্রশ্নের সহজ এবং সাবলীল উত্তর পাবেন গ্রুপের সিনিয়র মেম্বারদের কাছে থেকে। যারা নিয়মিত মার্কেটে যাতায়াত করে থাকেন।

বাংলা ইলেকট্রনিক্স - জয়ের বাংলা ব্লগ

গ্রুপের মেম্বাররা কখন কি প্রজেক্ট নিয়ে ব্যাস্ত আছেন, বর্তমানে কি করছেন তা নিয়ে নিয়মিত পোষ্ট করে থাকেন। সেগুলাও একজন নতুন হবিষ্টের জন্য শেখার অসাধারণ উৎস। যদি আপনার কৌতুহল থেকে থাকে তাহলে আপনি শিখে শেষ করতে পারবেন না।

বাংলা ইলেকট্রনিক্স - জয়ের বাংলা ব্লগ
১২ ইঞ্চি উফারের কয়েল ওয়াইন্ডিং

 

বাংলা ইলেকট্রনিক্স - জয়ের বাংলা ব্লগ
ইনভার্টার তৈরী

বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জিএম খলিলুর রহমান ভাই তার নিজের অসাধারণ সব প্রজেক্ট (পিসিবি ডিজাইন,ড্রায়াগ্রাম,প্রটিয়াস ফাইল এবং সোর্সকোডসহ) নিয়মিত সবার জন্য উন্মুক্ত করে থাকেন। যেখানে নিজ হাতে আরডুইনো বোর্ড বানাবার মতও প্রজেক্ট স্থান পেয়েছে।

screenshot_176
খলিলুর ভায়ের বানানো আরডুইনো বোর্ড

বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপের ফাইল সেকশনে জিপ আকারে রয়েছে অসাধারণ সব প্রজেক্টের ড্রায়াগ্রাম, পিসিবি ডিজাইন, প্রটিয়াস ফাইল এবং সোর্সকোড। যা খলিলুর ভাই সহ অন্য মেম্বারদের ডিজাইনকৃত/পরীক্ষৃত এবং সবার জন্য উন্মুক্ত।

কিভাবে যুক্ত হবেন বাংলা ইলেকট্রনিক্স গ্রুপেঃ

যদি আপনার ইলেকট্রনিক্সের প্রতি আগ্রহ থেকে থাকে। যদি কাজের ফাঁকে একটু সময় বের করতে পারেন, তাহলে ফেসবুকের সময়কেই কাজে লাগিয়ে শিখতে পারেন মজার ইলেকট্রনিক্স। এখানে ক্লিক করে যুক্ত বাংলা ইলেকট্রনিক্স এর ভূবনে। তারপর শিখতে থাকুন…আর শুধুই শিখতে থাকুন!

ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথাঃ

আজ আমি ইলেকট্রনিক্স যতটুকু জানি/পারি তার বেশীর ভাগ শিখেছি ফেসবুক গ্রুপ গুলো থেকে। যার মধ্যে বাংলা ইলেকট্রনিক্স তথা খলিলুর ভায়ের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া সব সময় যেকোন সমস্যায় যারা পরম স্নেহে ছায়ার মত মাথার উপরে আছেন তারা হলেন… শ্রদ্ধেয় সৈয়দ রাইয়ান ভাই, জাহাঙ্গীর আলম মিঠু ও শুকদেব বিশ্বাস দাদা। ছোটবেলা থেকে আমার প্রচুর নেশা ছিল ইলেকট্রনিক্স এর উপর। কিন্তু জেনারেলের স্টুডেন্ট হওয়ায় এবং শেখার সুযোগ না থাকায় ইচ্ছা আর কৌতুহল থাকা সত্তেও শিখতে পারতাম না। এরপর যখন থেকে শেখার সুযোগ পেয়েছি তখন আর থেমে থাকিনি। শিখেই চলেছি আর শিখেই চলেছি…

 

খলিলুর ভায়ের অফিস আমার কলেজের পাশবর্তী হওয়ায়, এপর্যন্ত বেশ কয়েকবার এই মহান মানুষটির সাথে দেখা করা,  ইলেকট্রনিক্স আড্ডা দেওয়া এবং হাতে কলমে শেখার সুযোগ হয়েছে। বার বার মুগ্ধ হয়েছি। সামান্য অহংকারটূকু কখনও উনার মাঝে খুজে পায়নি। আর কখনও কোনকিছুতেই “না” শব্দটি উচ্চারণ করতে দেখিনি।

আজ এপর্যন্ত। ভাল থাকবেন সবাই। আর সুযোগ পেলে অবশ্যই ইলেকট্রনিক্স শিখবেন। এই নেশা আপনাকে হাজার ব্যাস্ততা আর মানসিক অশান্তির মধ্যে প্রশান্তিতে মনটা ভরিয়ে দেবে। আসলে নিজ হাতে নতুন কিছু তৈরী করার মজায় আলাদা!

Facebook Comments

S.k.joy

খুব সাধারণ একজন। বসবাস গ্রামে। জন্ম, বেড়ে উঠা এখানেই। অসম্ভব ভালবাসা এই গ্রামীন জীবন, প্রকৃতি আর পরিবেশের প্রতি। কাজ পড়াশোনার ক্ষেত্রে বার বার সুযোগ এলেও শহরবাসী হয়ে উঠতে পারিনি শেষ পর্যন্ত। শহরের অতি আধুনিকতা, কংক্রিটে মোড়া সুউচ্চ অট্টেলিকায় বন্দি জীবন আমায় কখনও আর্কষিত করতে পারিনি। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে মেঠো পথে বেরিয়ে পড়ি সকালটাকে উপভোগ করতে। রাস্তার দুপাশে সারি সারি গাছ গুলোতে জেগে উঠা পাখিগুলো আমায় স্বাগত জানায়। বুক ভরে নিশ্বাস নিই। শিশিরে ভেজা ঘাস গুলো প্রতি মুহুর্তে সকালের কোমলতাকে জানান দেয়। সূর্যের রোদ সবার আগে গায়ে মেখে ফিরে আসি। দাদু-ঠাম্মা, ছোট ছোট ভাই বোন সবাইকে পরিবার। এইতো জীবন। খুশিতে ভরা জীবন। দূরে গিয়ে সবার থেকে আলাদা হয়ে নিজের মত থাকার মধ্যে জীবনের কোন মানে খুঁজে পাইনা আমি।