বাইক চুরি ঠেকাবে Smart Bike Security | আমার রিসেন্ট প্রজেক্ট।

নমস্কার! সুপ্রভাত! সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আজকের ব্লগে। Smart Bike Security ডিভাইস আপনার বাইক চুরি ঠেকাবে । অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপসের মাধ্যমে বাইকের সিকিউরিটি নিশ্চিত করা ছিল আমার রিসেন্ট প্রজেক্ট। আজ এটা নিয়েই কথা বলব। চলুন শুরু করা যাক।

বাজারে বাইকের জন্য অনেক ধরণের মানের এবং দামের সিকিউরিটি সিস্টেম রয়েছে। সল্পমূল্যে/উচ্চমূল্যে তা না কিনে নিজের প্রয়োজন মত নিজ হাতে কিছু করবার ইচ্ছে আপনার তখনই আসবে যখন আপনি এসব কাজের সাথে যুক্ত থাকবেন। আইডিয়া এবং ইঞ্জিনের লজিকটা ছিল ২ বছর আগের। অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস এবং হার্ডওয়্যারের কোডিংটাও সেময় করে রেখেছিলাম। কিন্তু পড়াশোনা, পরিক্ষা, কাজ আর হার্ডওয়্যার সেকশনের আলসেমিতে কেটে গেল ২ বছর।

কিছুদিন আগে এক প্রকার জিদ করেই কম্পিলিট করে ফেললাম পুরো প্রজেক্ট টা। ভিডিও দেখে নেওয়া যাবে এইখানে ক্লিক করে।

বাইক চুরি ঠেকাবে Smart Bike Security

Smart Bike Security প্রজেক্টে আমার টার্গেট ছিল বাইকের ইঞ্জিন অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে লক করে রাখা। যাতে ইউজারের পারমিশন ব্যাতিত কেউ কোনভাবেই বাইক স্টার্ট করতে না পারে। সেভাবেই সব প্রোগ্রাম করা হয়েছে। চলুন দেখে নিই ফিচারগুলো।

সুবিধাসমূহ

  • খুব কম পরিমাণ পাওয়ার খরচ করে। বাইক রানিং অবস্থায় প্রতি ঘণ্টায় ৮০ মিলি এম্পিয়ার মত।
  • বাইকের ড্যাশবোর্ড অফ থাকা অবস্থায় বাইকের ব্যাটারি থেকে কোন ধরণের পাওয়ার খরচ করেনা। তবুও ইঞ্জিন সর্বদা লক থাকে।
  • ডিভাইসটি পাসওয়ার্ড প্রটেক্টেড। তাই ফোন কিংবা বাইকের চাবি অন্যকারো নাগালে থাকলেও সে বাইক স্টার্ট করতে পারবেনা।
  • রয়েছে মেমরি সিস্টেম। ডিভাইসের মেমরিতে ইউজারের লাষ্ট কমান্ড সেভ করে রাখে। তাই বার বার বাইক লক আনলকের প্রয়োজন পড়েনা।
  • বাইক লক থাকা অবস্থায় কেউ বাইকের চাবি নিলেও বাইক স্টার্ট করতে পারবেনা যতক্ষণ না অ্যাপস থেকে আনলক করা হবে।
  • লক এবং আনলক করতে লাগবে পাসওয়ার্ড। তাই পাসওয়ার্ড না জানলে কেউ ব্যবহার করতে পারবেনা বাইক।
  • ডিভাইসের ভেতরে থাকা গোপন বাটন চেপে অ্যাপস থেকে প্রয়োজন মত পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে নেওয়া যাবে।
  • রয়েছে নটিফিকেশন সিস্টেম। বাইকের ড্যাশবোর্ড অন করলেই সাথে সাথে বিপের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে বাইকের বর্তমান স্ট্যাটাস।
  • এটা ব্লুটুথ টেকনোলোজির মাধ্যমে কাজ করে। তাই ব্যবহার করতে লাগবেনা ইন্টারনেট এবং ফোন থেকে কোন টাকাও খরচ হবেনা।
  • যেহেতু ডিভাইসটি পাসওয়ার্ড প্রটেক্টেড, তাই ইমার্জেন্সি অবস্থায় যেকোন ফোনে প্লেস্টোর থেকে অ্যাপসটি ডাউনলোড করে সঠিক পাসওয়ার্ড দিয়ে ব্যবহার করা যাবে বাইক।

বাইক চুরি ঠেকাবে Smart Bike Security

সাধারণত, চোর বাইক চুরির ক্ষেত্রে বাইকের সব গুলো লক ভেঙে ফেলে। তারপর ড্যাসবোর্ডের নিচ থেকে তার ছিড়ে শর্ট করে কিংবা ওপেন করে বাইক স্টার্ট করে নিয়ে পালিয়ে যায়। এমন ঘটনা খুব কমই ঘটে যে, লক ভাঙা এবং তার ছেড়ার পরে বাইক স্টার্ট করতে না পেরে চোর বাইক ঠেলে নিয়ে যায় কিংবা অন্যকোন যানবাহনে তুলে নিয়ে যায়। নানান দিক বিবেচনার পর আমার টার্গেট ছিল বাইকের সব লক ভাঙার পরেও চোর যেন বাইক স্টার্ট না করতে পারে এমন একটি ডিভাইস তৈরী করা। আমি সেটায় করেছি।

Smart Bike Security ডিভাইস বাইকের ইঞ্জিনের প্রাইমারী সেকশন থেকে ইঞ্জিন স্টার্ট সিস্টেমকে ডিজেবল করে দেয়। তাই এই ডিভাইসটি বাইক থেকে খুলে ফেলবার পূর্ব পর্যন্ত বাইক স্টার্ট করা সম্ভব না কোনভাবেই। আর ডিভাইসটি খুঁজে বের করাও সহজ সাধ্য হবেনা।

Smart Bike Security – প্রজেক্টের ভিডিও

IOT কিংবা GSM টেকনোলোজি ব্যবহার করে পুরো প্রজেক্ট টা পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে কন্ট্রোল করা যেতো। কিন্তু সেক্ষেত্রে কিছু  প্রতিবন্ধকতা আছে। খরচ বাড়বে, ডিভাইসে সব সময় ব্যালেন্স লোড করে রাখতে হবে নতুবা কাজ করবেনা, নেটওয়ার্ক সমস্যা হলে বাইকের সব থেকে কাছে থেকেও লক/আনলক করা যাবেনা ইত্যাদি!

আশাকরি প্রজেক্ট টা আপনাদের ভাল লাগবে। মতামত জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে। এছাড়া ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স বিভাগে ইলেকট্রনিক্স রিলেটেড আরো অনেক লেখা রয়েছে, সেগুলো পড়তে পারেন। ফেসবুকে আমাকে পাবেন এখানে

আজ এপর্যন্ত। ভাল থাকবেন। কথা হবে পরবর্তী ব্লগে।

Facebook Comments

S.k.joy

খুব সাধারণ একজন। বসবাস গ্রামে। জন্ম, বেড়ে উঠা এখানেই। অসম্ভব ভালবাসা এই গ্রামীন জীবন, প্রকৃতি আর পরিবেশের প্রতি। কাজ পড়াশোনার ক্ষেত্রে বার বার সুযোগ এলেও শহরবাসী হয়ে উঠতে পারিনি শেষ পর্যন্ত। শহরের অতি আধুনিকতা, কংক্রিটে মোড়া সুউচ্চ অট্টেলিকায় বন্দি জীবন আমায় কখনও আর্কষিত করতে পারিনি। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে মেঠো পথে বেরিয়ে পড়ি সকালটাকে উপভোগ করতে। রাস্তার দুপাশে সারি সারি গাছ গুলোতে জেগে উঠা পাখিগুলো আমায় স্বাগত জানায়। বুক ভরে নিশ্বাস নিই। শিশিরে ভেজা ঘাস গুলো প্রতি মুহুর্তে সকালের কোমলতাকে জানান দেয়। সূর্যের রোদ সবার আগে গায়ে মেখে ফিরে আসি। দাদু-ঠাম্মা, ছোট ছোট ভাই বোন সবাইকে পরিবার। এইতো জীবন। খুশিতে ভরা জীবন। দূরে গিয়ে সবার থেকে আলাদা হয়ে নিজের মত থাকার মধ্যে জীবনের কোন মানে খুঁজে পাইনা আমি।