সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি, প্লেস্টোরে আমার প্রথম অ্যাপস শিরোনামের জগাখেচুড়ি টাইপের লেখাতে। তো ঘটনার শুরু PSC রেজাল্ট দেবার দিন। লক্ষ্য করলাম, অনেকে আসছে রেজাল্ট জানার জন্য। অনেকে আবার জিগেস করছে কোন এড্রেসে গিয়ে রেজাল্ট দেখতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তো যারা জানতে চাইছে তাদের প্রত্যেকের হাতে এন্ড্রয়েড ফোন আছে। তো ফোন যখন আছে অনেকে নেটও ব্যবহার করে। তাহলে নিজে কেন নয়…
তো সেখান থেকেই মুলত এপস তৈরীর পরিকল্পনা কিংবা প্রয়োজনীয় অনুভব করা। মূলত এপস তৈরীর ক্ষেত্রে সমস্যা যেটা ছিল তা হল DPE এর সাইটের নিজস্ব কোন API নেই। থাকলে কাজটা সহজেই করা যেতো। তো ভাবতে লাগলাম, ঘাটতে লাগলাম, কোড লিখতে লাগলাম। এভাবেই রিসার্চ করেই চলল কয়েক ঘন্টা একটানা। API সমস্যার সমাধান করে ফেললাম। এবার এপস তৈরীর পালা। কিভাবে সমাধান করলাম সেটা কেউ জানতে চাইবেন না। 😛 এটাই রিসার্চের সিক্রেট। এর মধ্যে ক্লায়েন্ট নক দিয়ে বলল আর্জেন্ট প্রজেক্ট। ব্যাস এপস তৈরীর কাজ সেখানেই থেমে গেল।
এভাবে কাজ আর কলেজ, ঠান্ডা আর অলসতার মধ্যে দিয়ে চলল কয়েক দিন। আবার অ্যাপসের কাজ শুরু করলাম। ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন, রিমোট সার্ভারে ডেটা প্রসেসিং এবং রেজাল্ট এপসের মধ্যে অ্যাপেন্ড সহ নানা হাবিজাবি কাজ চলল কাজের ফাঁকে ফাঁকে কয়েকদিন। তৈরী হল এপস। 🙂
তো এপস তো তৈরী হল, এখন মানুষের কাছে পৌঁছানোর পালা। আর তার একমাত্র গ্রহণযোগ্য স্থান হল গুগল প্লেস্টোর। যদিও প্লেস্টোর ছাড়াও নানা ভাবে মানুষের কাছে পৌছানো যায়। কিন্তু লিজেন্ডরা প্লেস্টোর ছাড়া বিশ্বাস করেনা। অনেক সাধারণ মানুষ প্লেস্টোর অন্যকোথাও আবার এপস খুজেনা। কিন্তু গুগল ডেভেলপার কনর্সোলে আমার ডেভেলপার একাউন্ট নাই। আবার সমস্যা। শখের বশে এপস তৈরী করা হয়। এখন ডেভেলপার একাউন্ট খুলতে গেলে গুণতে হবে ২৫ ডলার। তার থেকে বড় কথা পাইওনিয়ার খালি। কি করা যায়। শরণাপন্য হলাম এক বড় ভায়ের। উনার ডেভেলপার একাউন্ট আছে। তো শেষমেশ তার কম্পানির ব্যানারেই গুগল প্লেস্টোরে আমার প্রথম অ্যাপস রিলিজ দিলাম।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
এতক্ষণ বক বক করলাম কিভাবে এপস তৈরী হল, কেন তৈরী হল এসব নিয়ে। এবার কিভাবে ব্যবহার করবেন তার উপর কিছু কথা হোক। তো এটা ব্যবহার করা তো খুব সহজ। 😀 প্রথমে এই লিংকে গিয়ে ডাউনলোড ইন্সটলের কাজটা সেরে ফেলেন। এরপর ওপেন করলে নিচের মত ইন্টারফেস দেখতে পাবেন।
প্রথমে ইয়ার সিলেক্ট করুন। ধরুন আমি ২০১৭ সালের রেজাল্ট দেখব। তাহলে নিচের মত সিলেক্ট করে Done এ ক্লিক করবো। যদিও এ২০১৭ সালটা এপসে প্রি-সিলেক্টেড অবস্থায় আছে।
এবার ইন্টার স্টুডেন্ট আইডি এর স্থানে এই ধরনের ( 1120172040102479 ) স্টুডেন্ট আইডি ইন্টার করুন( চেক করার জন্য ঐ আইডি টা ব্যবহার করতে পারন)। এ ধরণের আইডি আপনি পরীক্ষার্থীর এডমিট কার্ডে পাবেন। আপাত দৃষ্টিতে আইডি টা বড় মনে হলেও প্রত্যেকটা উপজেলার স্টুডেন্ট আইডির মধ্যে পার্থক্য কেবল শেষের তিনটা সংখ্যা। যাহোক, এবার সার্চ বাটনে ক্লিক করে অপেক্ষা করুন।
যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নিচের মত আপনার কাঙ্খিত রেজাল্ট টি দেখতে পারবেন। যদি ছোট স্ক্রিনের ফোন হয় তাহলে ডানে বামে ক্রোল কিংবা ফোনের রোটেশন চেঞ্জ করে পুরো ফলাফলটি দেখতে পারবেন।
তো হয়ে গেল এপস পরিচিতি। :p এবার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে আমার পরিশ্রম সার্থক করার দায়িত্ব টুকু আপনার।
আমার প্রথম অ্যাপস ডাউনলোড
উপরে যদিও একবার এপসের ডাউনলোড লিংক দিয়েছি। তবুও জাতীর সুবিধার্থে আরেকবার এখানে দিয়ে দিলাম। এই যে এখানে ক্লিক করুন।
ভিডিও টিউটোরিয়াল
অ্যাপস ব্যবহারের উপর নিচে একটি ছোট ভিডিও টিউটোরিয়াল দিয়ে দেওয়া হল। আশাকরি সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।
রিভিউ
আমি আমার কাজ করে দিয়েছি। এবার ব্যবহার করে, অন্যান্য এপসের সাথে কম্পেয়ার করে প্লেস্টোরে কিংবা এই পোষ্টের কমেন্ট সেকশনে আপনার মতামত জানাতে ভূলবেন না। বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন, গার্লফ্রেন্ডের সাথে শেয়ার করবেন এবং ভাল একটা কাজকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা করবেন। এই পরিশ্রম আপনাদের জন্যই। ভাল থাকবেন, সুস্থ্য থাকবেন। সময় সুযোগ হলে দেখা হবে অন্যকোন লেখাতে।